তাবলিগ জামাতের মহাসমাবেশ
সকাল থেকেই তীব্র যানজটের কবলে রাজধানী
আপলোড সময় :
০৫-১১-২০২৪ ০১:০৪:৩৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০৫-১১-২০২৪ ০২:৪৪:০৬ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : ফোকাস বাংলা নিউজ
সকাল থেকেই তীব্র যানজটের কবলে পড়েছে রাজধানীবাসী। যানজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুল-কলেজের অসংখ্য শিক্ষার্থী ও অফিসগামী মানুষসহ পথচারিরা। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাবলিগ জামাতের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকেই রাজধানীর সড়কে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের বহনকারী বিভিন্ন যানবাহন চলতে দেখা যায়। অনেক অংশগ্রহণকারীকে পায়ে হেঁটেও সম্মেলন স্থলের দিকে যেতে দেখা গেছে। মেট্রোরেলেও ছিল সম্মেলনে আসা ব্যক্তিদের ভিড়। এতে করে মেট্রোরেলে বাড়তি চাপ পড়ে।
রাজধানীর পল্টন, কাকরাইল, শাহবাগ, বাংলামটর, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, তেজগাঁও, সায়েন্সল্যাব, নীলক্ষেত, গুলিস্তান ও মৎস্যভবন এলাকাতে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। দেখা গেছে অনেকক্ষণ পরপর একটু একটু করে সামনে এগুতে পারছে গাড়িগুলো। যানজটে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকা স্থবির হয়ে পড়েছে। বিজয় সরণি মোড়ের চারপাশে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে যানবাহন। যানজটে আটকা পড়া বিরক্ত যাত্রীদের অনেক গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেই গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন।
সকাল পৌনে সাতটার দিকে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে অন্তত ১০ মিনিট আটকে ছিলেন জিনিয়া হাসান। তিনি বললেন, ‘অন্য দিন এত সকালে এমন যানজট কখনই দেখিনি। আজ এত সকাল থেকে রাস্তায় অনেক যানবাহন দেখলাম।রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম মোটরসাইকেলে করে তার বাসা থেকে কারওয়ান বাজার এসেছেন। বিজয় সরণি পর্যন্ত নির্বিঘ্নে আসতে পারলেও এরপর থেকে তীব্র যানজটের মুখে পড়েন। নজরুল ইসলাম বলছিলেন, ‘বিজয় সরণি থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এলাকা নিশ্চল হয়ে পড়েছিল। যানবাহন আটকে ছিল রাস্তায়। একটু একটু করে গাড়িগুলো নড়ছিল।’
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নাজনীন ইসলাম তার সন্তানকে নিয়ে বের হন। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ধরে ভালোভাবেই ফার্মগেট পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিলেন। কিন্তু এরপর গন্তব্যস্থল কারওয়ান বাজারের দিকে যেতে পারছিলেন না। অগত্যা তিনি মেট্রোরেলে উঠে পড়েন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচণ্ড যানজট দেখা দিয়েছে। ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায় সকাল থেকে আশপাশের রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট। রাজু ভাস্কর্যসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সমাবেশে আসা লোকদের ভিড়। সকাল থেকে যেসব শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ক্লাসের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন তারাও দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে ছিলেন। যানজটের কারণে কিছু কিছু বিভাগে ক্লাস বাতিল করা হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু এত বিপুলসংখ্যক মানুষকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। রাত থেকে ক্যাম্পাসের আশপাশে আমরা গাড়ি রাখতে দিইনি। কিন্তু তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
গাবলতী বাসের চালক বলেন, ‘আসাদ অ্যাভিনিউ থেকে বাংলামোটর আসতে সময় লেগেছে ১ ঘন্টা। অথচ এই রাস্তা আসতে সময় লাগে ২০ মিনিট। কিছুদিন কিছুদিন পর বিভিন্ন সমাবেশ ও রাস্তা অবরোধের ঘটনা ঘটে। এতে আমাদেরসহ যাত্রীদের ভোগান্তি হয়। তাই সরকারের উচিত বিষয়গুলোর দিকে নজর দেওয়া।
উল্লেখ্য, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ইসলামী মহাসম্মেলন শুরু হয়েছে। এতে যোগ দিতে রাত থেকে জমায়েত হয়েছেন আলেম-ওলামারা। দাওয়াত ও তাবলিগ, মাদারেসে কওমিয়া এবং দ্বিনের হেফাজতের লক্ষ্যে এ সম্মেলন করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশে ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানেও আলেম ওলামাদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তারা সমাবেশে এসেছেন।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিবেদক/ এআইএন/ এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স